ইউক্রেন চুক্তি চূড়ান্ত করতে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্পের দূত ও জামাতা
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করতে আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার। খবর আল আরাবিয়ার।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলে আসছেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে চান। তার প্রশাসনের ভাষায়, এটি একটি ‘রক্তস্নান’ ও ‘প্রক্সি যুদ্ধ’। গত আগস্টে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করলেও এখন পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধ অবসানে কোনো আশার আলো দেখাতে পারেনি।
এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ দফা খসড়া শান্তি প্রস্তাব ফাঁস হয়ে গেলে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলো তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তাদের অভিযোগ, এটি ন্যাটো, ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ডে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ ও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সীমাবদ্ধতার মতো মস্কোর প্রধান দাবিগুলোর পক্ষে।
এরপর ইউরোপীয় দেশগুলো পাল্টা শান্তি প্রস্তাব দেয়। জেনেভায় আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন জানায়, তারা যুদ্ধের অবসান টানতে একটি ‘হালনাগাদ ও পরিমার্জিত শান্তি কাঠামো’ তৈরি করেছে। পুতিন জানিয়েছেন, চলমান আলোচনা কোনো খসড়া চুক্তি নয়, বরং এমন কিছু প্রস্তাব নিয়ে, যা ভবিষ্যতে চুক্তির ভিত্তি হতে পারে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, ‘পুতিন–উইটকফ বৈঠকটি মঙ্গলবার দিনের দ্বিতীয়ার্ধে হবে’।
তবে রাশিয়ার ‘রেড লাইন’ কী সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। তার মতে, এ ধরনের আলোচনায় প্রকাশ্য বক্তব্য তেমন সহায়ক নয়।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার মতে, উইটকফের রাশিয়া সফরে কুশনারও সঙ্গী হবেন।
পুতিন একাধিকবার বলেছেন, তিনি শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত; তবে ইউক্রেন যদি কোনো সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে রুশ সেনারা আরও অগ্রসর হবে এবং বেশি জমি দখল করবে।
প্রো–ইউক্রেনীয় মানচিত্র অনুযায়ী, রুশ বাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের ১৯ শতাংশের বেশি, অর্থাৎ ১,১৫,৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যা দুই বছরের আগের তুলনায় এক শতাংশ বেশি। ২০২৫ সালে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা ২০২২ সালের পর সবচেয়ে দ্রুতগতির।
এরইমধ্যে সোমবার রুশ সামরিক কমান্ডাররা পুতিনকে জানান, রুশ বাহিনী সামনের সারির ইউক্রেনীয় শহর পোকরোভস্ক এবং ভভচানস্ক দখল করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১২ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে। ইউক্রেন কিংবা রাশিয়া কেউই নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা প্রকাশ করে না।

